কৌশলে আপনার সন্তানকে দেখে রাখুন
আপনার সন্তানকে দেখে রাখুন কৌশলে
প্রত্যেক মাতা পিতার গর্ব হচ্ছে তার সন্তান। প্রত্যেক মা বাবাই চান তার সন্তান পড়াশুনা করুক মানুষের মত মানুষ হোক। গরীব ধনী সবাই তার সন্তানকে নিয়ে গর্ব করতে চায়। আপনার সন্তানকে দেখে রাখুন। আপনার সন্তান সবসময় আপনার চোখের নাগালে থাকবে না। স্কুলে যাবে, খেলতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। আপনিও ব্যাস্ত থাকবেন আপনার কাজে। যদি আপনার সন্তানের কোন দোষ পান তাহলে বসে থাকবেন না, দেখেও না দেখার ভান করবেন
না। তাহলে আপনার প্রশ্রয় পেয়ে পেয়ে সে একদিন অনেক বড় অপরাধের সাথে জড়িয়ে পরতে পারে। সর্বদাই সন্তানকে শাসন করা যাবে না, তবে কিছু সময় তাকে শাসন করুন। অনেক মাতা-পিতাকে একটু বেশি খবরদারি করতে দেখা যায়, তাদের সন্তানকে অনেক বেশি সন্দেহ করে থাকে, এটি কিন্তু সঠিক উপায় নয়। চলুন জেনে নেই সন্তানের প্রতি আপনার ব্যাবহার কেমন হওয়া উচিত?
![]() |
Add caption |
১। আপনার সন্তানকে বিশ্বাস করুন, তার কাজের উপর বিশ্বাস রাখুন, যদি আপনি আপনার সন্তানের উপর বিশ্বাস না রাখেন তাহলে আপনার সন্তান মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরতে পারে। আর যখন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরবে তখন এটি তাকে বড় কোন অপরাধের কাছে নিয়ে যাবে।
২। আপনার সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন। “তোমাকে দিয়ে এসব হবে না”, “তোমার দ্বারা এটি সম্ভব না”, “এই কাজ তুমি করতে পারবে না” এসব কথা বলে তার মনে আঘাত দেবেন না। তাহলে সে যেকোনো কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। আপনার উচিত তাঁকে উৎসাহ দেয়া। যে তুমি কর, তুমি পারবে, তুমি না পারলে কেউ পারবে না। তাহলে সে অনেক বেশি উৎসাহ পাবে, কাজের প্রতি মনোযোগ বারবে।
৩। আপনার সন্তানকে অতিরিক্ত চাপে রাখবেন না। ও ফাস্ট হয়েছে তুমি হতে পারো নি কেন? অমুক মেডিকেল এ চান্স পেয়েছে তুমি পাওনি কেন? এসব কি করতেছ? এসব ভালর চেয়ে খারাপ বয়ে আনবে। সর্বদাই তাঁকে চাপমুক্ত রাখুন।
৪। আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে খেয়াল রাখুন। আপনার সন্তান কাদের কাদের সাথে মিশে খোজ নিন।
৫। মাদককে না বলুন আপনার সন্তানকে না বলতে শেখান। আপনি নিজে সচেতন হন তারপর আপনার সন্তানকে সচেতন করুন। মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো তার সামনে তুলে ধরুন।
![]() |
৬। জেনে নিন আপনার সন্তান কি হতে চায় কি করতে চায়। সে যা হতে চায় তাঁকে তাই হতে দিন, সে শিক্ষক হতে চাইলে তাঁকে শিক্ষক হতে দিন। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনোকিছু চাপিয়ে দেবেন না।
৭। আপনার সন্তানকে ভয় দেখান থেকে বিরত থাকুন। তাকে কোন প্রকার ভয় দেখাবেন না।
৮। মাঝে মাঝে একটু একটু শাসন করুন। সন্তানকে যেমন ভালবাসা যায় তেমনি শাসনও করা যায়। তাই করুন। মাত্রাতিরিক্ত শাসন থেকে বিরত থাকুন। কোন অপরাধ পেলে হালকা শাসন করুন তাকে ভালভাবে বুঝান। আবার মাত্রাতিরিক্ত আদরে রাখবেন না। বেশি আদর পেলে বাদর হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
৯। আপনি আপনার সন্তানের বেয়াদবিকে প্রশ্রয় দেবেন না। তাকে ধরিয়ে দিন যে এটি ভাল না। বুঝিয়ে বলুন।
১০। দুই সন্তান যদি থাকে উভয়কে সমান নজরে রাখুন। একচোখা হবেন না। একজনের সাথে অপরজনের তুলনা করবেন না। তাদেরকে নিজের মত করে চলতে দিন। তাদেরকে কোনকিছুতে কম বেশি করবেন না। উভয়কে সমান আদর করুন। এতে করে তাদের মন চাঙ্গা থাকবে।
১১। শিশুকে সুতি কাপড় পরিয়ে নরম কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রাখুন। বেশী শীতে সোয়েটার ব্যবহার করুন। শিশুর ত্বকে বেবি অয়েল বা লোশন ব্যবহার করুন। দিনের বেলা ঘরের দরজা জানালা সব খুলে দিন যাতে করে রোদ ও নির্মল বাতাস ঘরে ঢুকতে পারে।
১২। শিশুর জামা কাপড় ঘরের মধ্যে না শুকিয়ে অবশ্যই রোদে শুকাবেন। শিশুকে রাতে শোয়ার সময় ডায়াপার পরিয়ে শোয়ান। শিশুকে কখনো আলাদা দোলনায় রাখবেন না। তাকে বাবা মায়ের সাথে নিয়ে ঘুমাবেন। এতে শিশু উষ্ণ থাকবে, বাবা মায়ের সঙ্গে আন্তরিকতা বাড়বে এবং মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হবে। শিশুকে ঘরের বাইরে না নেওয়ার চেষ্টা করুন। রোদে দিতে হলে ঘরের জানালার পাশে শুইয়ে বা ঘরের বারান্দায় বিছানা পেতে রোদ লাগান। কাশি হলে, শ্বাস টানতে শব্দ করলে, দুধ টেনে খেতে না পারলে, শিশুর নিঃশ্বাসের সঙ্গে পাঁজর বেঁকে যেতে থাকলে অতিদ্রুত চিকিৎসকের পরামরশ নিন।
১৩। কখনো কোন অবস্থাতেই খুব বেশী পরিমাণে পাউডার বা তেল আপনার শিশুর ত্বকে ব্যবহার করবেন না, যা শিশুর কোমল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। প্রয়োজনের চেয়ে বেশী পাউডার ব্যবহার করার ফলে শিশুর ত্বকের লোমমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং শারীরিক প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। এতে শিশুর ঘামাচি ও র্যাশ হতে পারে। অতিরিক্ত রোদে নবজাতক শিশুকে নিয়ে বের হবেন না কখনো। নবজাতকের সামনে হাঁচি-কাশি দিবেন না। শিশুকে ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক পরিবেশে রাখবেন। শরীর ঘেমে গেলে বারবার শুকনো নরম কাপড় দিয়ে খুব আলতোভাবে গা মুছে দিন।শিশুকে অবশ্যই সুতি ও নরম আরামদায়ক পোশাক পড়াবেন। নবজাতক শিশুর মাকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে দিন। এতে মায়ের বুকের দুধ থেকে শিশু পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে।
No comments